বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়
খন্ডকালীন তিন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম
- আপলোড সময় : ০৯-০৩-২০২৫ ১১:১৩:৩৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৯-০৩-২০২৫ ১১:১৩:৩৪ অপরাহ্ন

আশিস রহমান ::
ভারতের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপীঠ বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়। দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া গ্রামে বিদ্যালয়টির অবস্থান। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠার পর বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়। সীমান্ত এলাকার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সমস্যার যেন কোনো কমতি নেই। বর্তমানে ৩১৮ জন শিক্ষার্থীর এই বিদ্যালয়টির পাঠদান ও একাডেমিক কার্যক্রম চলছে মাত্র তিনজন খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে। প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, আইসিটি, ভিপিএড, চারু ও কারু কলা বিষয়ের কোনো শিক্ষক নেই। এতে একদিকে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকেরা অন্যদিকে শিক্ষার্থীদেরও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শুধু শিক্ষক সংকটই নয়, একাডেমিক ভবনেরও সংকট রয়েছে। পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবন না থাকায় শ্রেণীকক্ষের অভাবে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকমে চলছে ক্লাসের পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট টিনের একাডেমিক ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। চালের টিনে মরিচা ধরে ফুটো হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের মেঝেতে পানি পড়ে জলাবদ্ধতা হয়। লাগোয়া আরেকটি টিনসেড ভবনের চালা গত দুই বছর ধরে মেরামতবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকায় সেখানেও শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী মাহমুদা আক্তার শিমু বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ক্লাস রুমে অবস্থান করা যায় না। বৃষ্টির পানিতে বইখাতা ভিজে যায়।
অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী রুমা আক্তার বলেন, স্কুলে আমাদের মেয়েদের জন্য কোনো কমন রুম নাই। ভাঙাচোরা ক্লাসরুমে ক্লাস করতে কষ্ট হয়। আমাদের স্কুলে একটি একাডেমিক ভবন জরুরি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবক আব্দুল মোতালিব ভুইয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নেই। একাডেমিক ভবন নেই। আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হবে। একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকট দ্রুত নিরসনে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হযরত আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ১০ জন শিক্ষকের পদ শূন্য। এছাড়া চাহিদার তুলনায় অর্ধেকও নাই শ্রেণীকক্ষ। এই প্রতিষ্ঠান চালাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের নিকট শিক্ষকের চাহিদা দিয়েছি কিন্তু কবে নাগাদ শিক্ষক পাবো তা জানি না। এ ব্যাপারে আমি একাধিকবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথেও কথা বলেছি।
সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকটের বিষয়ে বাঁশতলা চৌধুরী পাড়া শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করব।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ